প্রতিনিধি ২২ জুলাই ২০২৫ , ৭:০১:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
উত্তরার দিয়াবড়ি এলাকায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এখন যেন নিঃশব্দ এক মৃত্যুপল্লি। প্রতিদিন এই সময়ে কোলাহল আর পড়ার শব্দে মুখর ক্লাসরুমগুলো খালি-সুনশান। ভরনের করিডোরে নেই কোলাহল-শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি। বাতাসে ভাসছে পোড়া গন্ধ, পুড়েছে শরীর কিংবা কারও স্বপ্ন!
স্কুল ভবনের সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শিশুদের বই, খাতা, ব্যাগ, জুতা, পানির বোতল, এমনকি কয়েকজনের আঁকা ছবি। এই ব্যাগ-বই-খাতায় যাদের কোমল হাত পড়তো তারা অনেকে হয়তো না ফেরা দেশে কিংবা হাসপাতালের বেড়ে পোড়া শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছে।
সোমবার দুপুরে সংঘটিত ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক আর নিরবতা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) কলেজ ক্যাম্পাসের প্রাইমারি শাখার সামনের ভবন ঘুরে দেখা যায়, মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসের প্রাইমারি শাখার সামনে এখনো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সেই বিভীষিকাময় ঘটনার চিহ্ন। তৃতীয় শ্রেণির ‘প্রাথমিক বিজ্ঞান’, ‘বাংলা ব্যাকরণ’সহ একাধিক বই অর্ধেক পুড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপের পাশে। খাতার পাতাগুলো যেন আগুনের আঁচে বিবর্ণ হয়ে গেছে, কারো নাম লেখা মলাট এখনো দৃশ্যমান। চারপাশে পোড়া কাগজের গন্ধ, সিঁড়ির পাশে পড়ে আছে ছোটদের ব্যাগ।
উপস্থিত উৎসুক জনতা ও অভিভাবকদের চোখে-মুখেও উদ্বেগ, ক্ষোভ আর বেদনার ছাপ।
নাজনীন সুলতানা নামে এক অভিভাবক নব্বইনিউজকে বললেন, এগুলো আমাদের সন্তানের বই। গতকাল পর্যন্ত তারা এখানে পড়া লেখা করছিল। এখন শুধু ছাঁই আর ধোঁয়া। স্কুল মানেই তো নিরাপদ আশ্রয় হওয়ার কথা। আজ তা মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠলো!
রফিকুল ইসলাম নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা, যিনি নিজেও উদ্ধার কাজে এগিয়ে এসেছিলেন। তিরি বলেন, “আমি ছোটদের আর্তনাদ শুনে দৌড়ে এসেছিলাম। ধোঁয়ার ভেতর কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। যারা বাঁচতে পেরেছে, তারাই বলছে—ভেতরে বের হওয়ার পথ খুঁজে পায়নি।
এর আগে, গতকাল দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় দুর্ঘটনায় পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল। যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়েছে।