প্রতিনিধি ২০ জুলাই ২০২৫ , ৪:৪০:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক :
নেট বোলারের একটু নিচু হওয়া বলটাও ফাইন লেগ দিয়ে উড়াতে চাইলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। টাইমিং মিলল। বল চোখের পলকে সীমানার বাইরে। ফাইন লেগ, মিড উইকেট, ডিপ ফাইন লেগ দিয়ে শট খেলতে পছন্দ করেন শামীম।
মিরপুর শের-ই-বাংলায় কৃত্রিম আলোয় সেই অনুশীলনটাই করছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ওই শটের পর আরো কিছুক্ষণ নিজেকে ঝালিয়ে নিলেন শামীম। যে ধারাবাহিকতায় তিনি আছেন, ফর্ম ক্যারি করছেন তাকে সেভাবেই পাকিস্তান সিরিজে দেখতে চান সমর্থকরা। তাইতো শ্রীলঙ্কা থেকে গতকাল সকালে দেশে ফিরে বিকেলেই মাঠে নেমে পড়েন শামীম।
শুধু কী শামীমৃশ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গোটা দল যেভাবে পারফর্ম করেছে, সিরিজ জিতেছে একই পুনরাবৃত্তি ঘরের মাঠে দেখতে চান সমর্থকরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কখনো সিরিজ না জেতা বাংলাদেশ এবার নতুন করে ইতিহাস লিখেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ বছর আগেই বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছে। এবার বাংলাদেশের মিশন সিরিজ জয়ের সঙ্গ জয়ের খরা কাটানো।
সবশেষ ১২ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একটিও জয় নেই। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সবশেষ ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে ৫ উইকেটে জিতেছিল তারা। এরপর দেশে কিংবা দেশের বাইরে পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক লিটন দাস গণমাধ্যমে বলেছেন, “আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। সব কিছু তৈরি হয় ইতিহাস হওয়ার জন্য। আর রেকর্ড কিন্তু ভাঙাও হয়। আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলি, রেকর্ড ভাঙতে সময় লাগবে না। ওই রেকর্ডের চিন্তা না করে, আমরা কী করতে পারি, আমাদের কতখানি সামর্থ্য আছে, কতটা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, তাহলে ওই সব জিনিসই (আগের রেকর্ড) বদলে যাবে।”
“গত ৯ বছর ধরে আমরা জিতিনি, এরকম বিষয়কে কখনও ভাবি না। আমরা শুধু ভালো ক্রিকেট ও নিজেদের ধরনের ক্রিকেট খেলায় মনোযোগ দেই। এই সিরিজেও একই দিকে আমাদের লক্ষ্য থাকবে। প্রতিটি ম্যাচে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। প্রতি ম্যাচে বড় লাফ দিতে চাই। এটিই আমাদের লক্ষ্য থাকবে। তবে হ্যাঁ, এসব করতে গিয়ে যদি আমরা ৩-০তে জিততে পারি, তাহলে খুশির চেয়েও বেশি কিছু হবো।” – যোগ করেন লিটন।
সন্ধ্যা ৬টায় দুই দল প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে। জয়ের তীব্র আকাঙ্খা থাকলেও ২০২১ সালের ভুল করতে নারাজ তিনি। সেই বছর নিউ জিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫টি করে সিরিজ খেলেছে। দুই দলই সিরিজ হেরেছিল। কিন্তু লো, স্পিনিং উইকেট বানিয়ে ভবিষ্যতে অনুশোচনায় ভুগছে বাংলাদেশ। লিটনের কথায় তা ফুটে উঠল,
“আমিও একমত! (২০২১ সালের নিউ জিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ খেলে) অনেক ক্রিকেটারেরই ক্যারিয়ার নিচু হয়ে গেছে, ব্যাটসম্যান হিসেবে। আমি যদি বোলার হতাম, হয়তো আমার ক্যারিয়ারও বিল্ড-আপ হতো ওই উইকেটে খেললে (হাসি) । অবশ্যই দল হিসেবে বাংলাদেশ ডেভেলপ করেছে, সিরিজ জিতেছিল। বিশাল প্লাস পয়েন্ট। তবে একই সময়ে ব্যটসম্যানদের জন্য আবার খারাপ ছিল। আমার মনে হয় না, ওই জিনিসের পুনরাবৃত্তি হবে। উইকেট দেখে ভালো মনে হয়েছে। একটা ইভেন গেম হবে।”
লিটনের আশা, ‘‘আমার কাছে মনে হয় ভালো উইকেট হবে। ব্যাটিং–বোলিং দুই সাইডেই থাকবে।’’
তবে পাকিস্তানকে হারাতে কাজটা সহজ হবে না সেই কথাও জানিয়ে রাখলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি, এই সিরিজটা এত সহজ হবে না। তাদের নিশ্চয়ই বোলার আছে, তারা ক্যাপেবল ভালো বল করার জন্য। চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। মিরপুর অলওয়েজ চ্যালেঞ্জিং হয়, এট দ্য সেইম টাইম এটা নিয়েই ভালো খেলতে হবে।’’
পাকিস্তানকে হারিয়ে টানা সিরিজ জয় সম্ভব জানিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেছেন,“চেষ্টার কখনও কমতি থাকবে না। শুধু দুইটা কেন, যদি ব্যাক টু ব্যাক অনেকগুলো সিরিজও হয়, আমাদের একই মানসিকতা থাকবে, একই লক্ষ্য থাকবে- সিরিজ জেতার। তবে নির্দিষ্ট ম্যাচে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।”
“শ্রীলঙ্কায় দুইদিন আগে যেটা ঘটে গেছে ওটা অতীত। এখন এটা নতুন জায়গা, নতুন ভেন্যু- সবকিছু নতুনভাবে নিতে হবে। নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। আমরা প্রস্তুত এই চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার জন্য। দেখি কী হয়।”