প্রতিনিধি ৪ আগস্ট ২০২৫ , ৯:৩৯:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ রাজিব উদ্ দৌলা চৌধুরী :
সরকারের কার্যক্রম নিয়ে অর্থনীতিবিদদের ঢালাও সমালোচনা প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অর্থনীতিবিদ যারা কিছুই (সরকারের উন্নয়ন) দেখেন না; দেখতে দৃষ্টি লাগে। অন্তর্দৃষ্টি লাগে। না চাইলে তো দেখতে পারবেন না।
এ সময় সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি সাফল্য প্রচারের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান অর্থ উপদেষ্টা।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস সংক্রান্ত যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলো গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা ও ২০২৫-২৬ কর বছরের ই-রিটার্নের উদ্বোধন উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করে এনবিআর।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা।
অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের জুনিয়র অর্থনীতিবিদরা, তারা নাকি কিছুই দেখেন না। আমি তাদের সবাইকে চিনি। ৭০ সাল থেকে শিক্ষকতা করি, সবাই আমার ছাত্র। যারা অর্থনীতিবিদ কিছুই দেখেন না; দেখতে দৃষ্টি লাগে। অন্তর্দৃষ্টি লাগে। যদি দেখতে না চান, দেখতে পারবেন না।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা অনেক ভুল করি, ঠিক আছে। তবে ভালো কাজগুলোকে উৎসাহ দিলে ভালো লাগে। যা হোক, আপনাদের স্বাধীনতা আছে- আপনারা বলতে পারেন।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচারের আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি সাফল্যও প্রচার করতে বলেন অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, সূক্ষ বিষয় থাকতে পারে। গ্লাসের অর্ধেক দিকটা না দেখে, পানি ভর্তি উপরের দিকে তাকান। ক্রিটিসিজম আছে অনেকের ব্যাপারে। আমি সবসময় বলি স্বচ্ছতা দিনের আলোতে বেরিয়ে আসে। আমার একটা কথা- সানশাইন ইজ দ বেস্ট এন্টিসেপটিক। যতই সেভলন ব্যবহার করি, ডেটল ব্যবহার করি কিন্তু ড্রেসিং এর সময় দেখবেন ডাক্তাররা কিন্তু কোনো কিছু দেয় না। জাস্ট একটু মুছে দিয়ে দেয়।
উপদেষ্টা বলেন, আমার ওয়াইফ একদিন ড্রেসিং এর সময় বললো কিছুই তো দিচ্ছে না। ডাক্তারকে বললাম। উনি বললো, কিচ্ছু লাগবে না। খালি একটা গজ দিয়ে একটু ওপরের দিকে ড্রেসিং করে দিলো। বললো, বাতাস ও সূর্যের আলোতে সুস্থ হয়ে যাবে। হুইচ ইজ ট্রু।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন প্রক্রিয়া আরেকটু সহজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমার বয়স ৬৫ বছরের বেশি। হয়তো একটু চেষ্টা করবো। তবে ডিফিকাল্ট আমার জন্য। আমি খুব টেক স্যাভি না। এই খালি টেলিফোনটা, ম্যাসেজটা নিতে পারি। আর ইমেইল দিতে পারি। এর বেশি কিছু করলে আটকে গেলে আমি পারি না। এটা কিন্তু সবার জন্য। এটা ইউনিভার্সাল একটা সিস্টেম। সবাই বুঝতে পারবে। কম্পিউটারের ভাষা এমন ভাষা যে সবাই বুঝতে পারবে, অ্যাক্সেস করতে পারবে। শিগগির কিন্তু এটা লোকজন ব্যবহার করবে।
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা এ সময় বলেন, বাজেটের পর একটি সংবাদ সম্মেলন করে সরকার। কিন্তু রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয় না কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ সেটা বেসরকারি খাত থেকে আমরা শুনি, এর মধ্যে অনেক ভুলও হয়।
তিনি বলেন, যারা এনবিআর নিয়ে রিপোর্টিং করেন তাদেরকে নিয়ে বাজেট পরবর্তী সময়ে একটি সেমিনার করা প্রয়োজন । বাজেটে যে পরিবর্তন করা হয়েছে সেগুলো আসলে কী ও কেন করা হয়েছে; কতটা রাজস্ববান্ধব এই জিনিসগুলো যদি আমাদের গণমাধ্যমকর্মীদের বোঝান তাহলে তারা জাতিকে বোঝাতে পারবেন। ভুল বোঝাবুঝি কমে যাবে।
সেমিনারে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আনা পরিবর্তন নিয়ে কথা বলেন এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।