প্রতিনিধি ৩ আগস্ট ২০২৫ , ৯:৫০:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
লাইফস্টাইল ডেস্ক :
ছোট মেয়ের কান ফোঁড়ানো হবে, তারপর কানে শোভা পাবে বাহারি দুল। তাছাড়া কান ফোঁড়ানোতো প্রাচীন রীতি। এই রীতিকে পাশ কাটাতে তেমন দেখা যায় না বললেই চলে। সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য ফোঁড়ানো হয় মেয়েদের কান। আগের দিনে দাদি, নানিরাই এই কাজটি করে দিতেন। সুই দিয়ে কান ফুড়িঁয়ে কানে ঝুলিয়ে দিতেন সুতা। এখনও যে এমনটা হচ্ছে না তা কিন্তু বলা যায় না।
কিন্তু অদক্ষ হাতে কান ছিদ্র করলে ছিদ্রটি উপর-নিচে হয়ে যেতে পারে। আবার খুব কম বয়সে কান ছিদ্র করলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে কানের লতি বড় হয়ে ছিদ্রটা নিচের দিকে নামতে থাকে। নষ্ট হয় সৌন্দর্য। যদি ১০-১২ বছরের মধ্যে কান ফোঁড়ানো হয়, ছিদ্রটা সরে যাবার সম্ভাবনা থাকে না। এমনটাই জানালেন রেড বিউটি স্যালনের স্বত্বাধিকারী আফরোজা পারভীন।
তিনি বলেন ‘‘মাপ ঠিক রেখে কান ফোঁড়ানোর জন্য ছোট্টমণির কানের লতিতে অ্যানেসথেসিয়া (জেল) দেওয়া হয়। যেন সে ব্যাথা না পায়। যেখানটাতে ছিদ্র করা হবে সেটা নির্দিষ্ট করার জন্য মার্কিং পেন দিয়ে মার্ক করে নেওয়া হয়। এরপর একটি সুইযুক্ত বিশেষ যন্ত্র (গান) দিয়ে কান ফোঁড়ানোর পর পরিয়ে দেওয়া হয় গোল্ডপ্লেটেড পেষ্টিং রিং।’’
কান ফোড়াঁনোর মাত্র দুদিন পর গোল্ডপ্লেটেড পেষ্টিং রিং খুলে পরিয়ে দেওয়া যায় সোনার রিং। এসময় শিশুকে নরম বালিশে শুতে দিতে হবে। মাথার উপর দিয়ে খুলতে হয় এমন জামা না পরা ভাল। এতে জামা খোলার সময় আঘাত পাবার সম্ভাবনা থাকে। কারও কারও ক্ষত শুকাতে একটু বেশি সময় লেগে যায়। এই অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলেন আফরোজা পারভীন।
একটু সাবধানতা
আল রাজী হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা. মোঃ আব্দুস সামাদ বলেন, ‘‘যেদিন যে মুহূর্তে কান ফোঁড়ানো হবে শিশুর জ্বর বা ঠান্ডাজনিত কোন সমস্যা আছে কি না দেখে নিতে হবে। স্বাভাবিক, সুস্থ অবস্থায় থাকলে কান ফোঁড়ানো যাবে। শিশু অসুস্থ থাকা অবস্থায় কান ফোঁড়ালে তার কানের কার্টিলেজে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। এমন কি কানে প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে।’’
মেয়ের কান ফোঁড়ানোর পর মায়েদের চিন্তার শেষ থাকে না, মেয়েকে কি খেতে দেবে আর কি দেবেন না? সমস্যা যখন এই এ বিষয়ে পরামর্শ দিলেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ।
* ভিটামিন সি জাতীয় খাবার দিতে হবে। এই খাবারে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষত শুকাতে সাহায্য করবে। এই জাতীয় খাবার ক্ষত স্থানে নতুন কোষ গঠনে কাজ করবে।
* প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে দিতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকবে এবং ছিদ্র করা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকাবে।
* তবে, যেসব খাবারের শিশুর অ্যালার্জি আছে, সেসব একেবারেই খাওয়ানো যাবে না। যেমন, পুঁইশাক, বেগুন, চিংড়ি, কচুশাক এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।
কোথায় কোথায় কান ফোঁড়ানো যায়
রাজধানী বিউটি পার্লারের মধ্যে রয়েছে-পারসোনা বিউটি পার্লার, ম্যাজিক মিরর মেকওভার লাউঞ্জ, রেড বিউটি স্যালুন এবং ফারজানা শাকিল। এছাড়া, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে মেয়ের কান ফোঁড়াতে চাইলে চলে যেতে পারেন রাজধানীর ম্যাক্স হেলথ কেয়ার, ইবনেসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, আল রাজী হাসাপাতাল বা ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে।