প্রতিনিধি ১ আগস্ট ২০২৫ , ৫:৪২:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজার ছোট্ট আমিরের জীবন এক হৃদয়বিদারক গল্প হয়ে উঠেছে। একদিকে ক্ষুধা, অন্যদিকে যুদ্ধের সঙ্কট—এই দুটি একসঙ্গে বয়ে নিয়ে ১২ কিলোমিটার খালি পায়ে হেঁটে খাবারের জন্য ত্রাণ কেন্দ্রে এসেছিল সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
গেল ২৮ মে ঘটনাটি ঘটেছিল। সাবেক মার্কিন সেনা অ্যান্থনি আগুইলার, যিনি গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে কাজ করতেন, তিনি তার চোখে দেখা সেই মর্মান্তিক ঘটনার কথা শেয়ার করেছেন।
অ্যান্থনি বলেন, আমিরের চোখে ছিল অসীম আশা। সে একদম রোগা, খালি পায়ে, প্রচণ্ড রোদে হাঁটছিল। ১২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ত্রাণ কেন্দ্রে পৌঁছানোর পরও সে কিছু পেত না, শুধু খাবারের জন্য কষ্টে থাকা একটা শিশুর মতো।
আমির সেখানে পৌঁছানোর পর, তার ভাগ্যে জুটেছিল মাত্র এক মুঠো চাল ও ডাল, যা মাটিতে পড়ে ছিল। সেসব তুলতে তুলতে আমির একটু অবাক হয়ে অ্যান্থনির দিকে তাকায়। তারপর সে তার কাছে এসে তার সঙ্গের জিনিসগুলো রেখেছিল, এক হাতে চুম্বন করেছিল এবং ইংরেজিতে বলেছিল, ধন্যবাদ।
অ্যান্থনি আরও বলেন, আমির ছিল একজন শিশু, যে কেবল একটুখানি খাবার পেতে চেয়েছিল। তার মুখে ছিল একটি অনন্য ধন্যবাদ, যা কখনও ভুলতে পারব না। কিন্তু কয়েক মিনিট পর, যখন আমির ভিড়ের মধ্যে তার জিনিসগুলো নিয়ে চলছিল, তখনই ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়। গুলির শব্দ শোনা যায়। এবং সে মুহূর্তে, পাখির মতো উড়ে গিয়ে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় ছোট্ট আমির।
অ্যান্থনি আগুইলার বলেন, আজকের দিনে মৃত্যু এমন দ্রুত আসে, যেমনটি আমরা কখনও আশা করি না। কিন্তু গাজার বাস্তবতা, প্রতিটি দিন, এক অজানা মৃত্যু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
আমিরের মৃত্যু শুধু এক শিশুর হারানো জীবন নয়, এটি গাজার অসংখ্য শিশুর কথা, যারা প্রতিদিন যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও ক্ষুধার মধ্যে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালাচ্ছে। তাদেরও কি আমিরের মতো কোনো ভবিষ্যত ছিল? সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর