প্রতিনিধি ৩১ জুলাই ২০২৫ , ৩:৪৫:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
হাবিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপির অস্থায়ী অফিসের ভাড়ার টাকা চাওয়ায় জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৭) নামের এক দোকান মালিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দলটির পাঁচ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। বুধবার (৩০ জুলাই) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মারামারি-হানাহানি, রক্তাক্ত সংঘাতের ঘটনায় জড়িত থাকাসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা প্রধান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক খোকন প্রধান, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সদস্য রাসেল প্রধান, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আলম মিয়া ও সাদ্দাম হোসেনকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিএনপির পার্টি অফিস করার জন্য জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছ থেকে অফিসটি ভাড়া নেন তোতা মেম্বার। স্থানীয়দের কাছে অফিসটি বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অফিস হিসেবে পরিচিত ছিল।
ঘটনার দিন সকালে আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজারে বিএনপির অস্থায়ী অফিসের ভাড়ার টাকা চাওয়ায় জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৭) নামের একজন দোকান মালিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। দোকান ভাড়া নিয়ে অস্থায়ীভাবে মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির কার্যক্রম চালালেও ভাড়ার টাকা না দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বিরোধের কারণ উল্লেখ করে নিহতের ছেলে রাসেল হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্টের পর বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী ও মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বার সালমদী বাজারে তার বাবার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ভাড়ায় তিনটি দোকান ভাড়া নেন। এর একটি দোকানে বিএনপির কার্যালয় (মাহমুদনগর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি) স্থাপন করেন। বাকি দুটি দোকানের ভাড়া পরিশোধ করলেও যে দোকানটিতে বিএনপির কার্যালয় স্থাপন করেছেন সেই ভাড়ার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করছিলেন না। এ নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ভাড়া চাইতে বিএনপি কার্যালয়ে তোতা মেম্বারের কাছে যান। ভাড়া চাইলে তোতা মেম্বার টালবাহানা শুরু করে। ওই সময় উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তোতা মেম্বার জাহাঙ্গীরকে চড় দেয়। তোতা মেম্বারের ছেলে খোকন, রাসেল, ভাতিজা সাদ্দাম, আলমসহ আরও কয়েকজন তার বাবাকে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরেই এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর থেকে বিএনপি নেতা তোতা মেম্বারসহ তার অনুসারীরা সবাই আত্মগোপনে রয়েছেন।