প্রতিনিধি ৩০ জুলাই ২০২৫ , ৫:০৬:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
হাবিবুর রহমান ,জেলা প্রতিনিধি ;
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে গোপনে সরকারি বই বিক্রির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় কলেজ ক্যাম্পাসে বই বিক্রির সময় স্থানীয়দের হাতে অধ্যক্ষ, পিকআপ চালক এবং ক্রেতা আটক হন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে একটি নীল রঙের পিকআপ ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রবেশ করে। অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন স্টোর রুম থেকে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির নতুন পাঠ্যবই কেজি দরে বিক্রি করেন। চালক হেদায়েত উল্লাহ ও একজন বই ক্রেতা মিলে পিকআপে সব বই তুলে নেন। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা বাধা দিলে তিনজনকে আটক করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক নূরে আলমকে খবর দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক নূরে আলম বইগুলো পিকআপ থেকে নামিয়ে স্টোর রুমে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়েই অভিযুক্তদের ছেড়ে দেন তিনি। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানায়, “আমাদের বই দেওয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছিল, অথচ সেই বই কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।” তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করেছে। দাবি না মানলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক নূরে আলম বলেন, “প্রায় এক লাখ টাকার নতুন ও পুরাতন বই বিক্রির সময় জব্দ করা হয়েছে। অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ হওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পরপরই মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে। যদি শিক্ষা অফিসের কেউ সম্পৃক্ত থাকে, তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।”