প্রতিনিধি ২২ জুলাই ২০২৫ , ৩:০৪:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) ‘জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল (সিআর) আবরার বলেন, ‘লম্বা জীবন কাটানো শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ছিল না, তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল দামি জীবন। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই মহৎ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানাই। যারা শহীদ হয়েছেন তারা এ দেশের সূর্যসন্তান। যারা কোনোদিন ভাবেনি তারা মসনদ থেকে পালাবে, তাদেরকে বিন্দু বিন্দু শক্তি অর্জন করে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে শহীদরা। আমি ভীষণভাবে ঋণী শহীদদের কাছে।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান শহীদদের ঋণ স্বীকার করে বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানটি কিছু মানুষের (শহীদ ও আহত) ঋণ স্বীকার করার জন্য একটি ছোট আয়োজন। এখন সময় শহীদ ও তাদের পরিবারকে ধন্যবাদ জানানোর। সীমিত পরিসরে আমরা উদ্বোধনী কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের ঋণ স্বীকার শুরু করলাম। ভবিষ্যতে আমরা এর পরিধি আরও বৃদ্ধি করব।’
তিনি বলেন, অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছিলেন তারা সেদিন নিজের আইডি কার্ড ও ব্যাজ পরিধান করা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তাদের পরিবারগুলোর প্রতি আমাদের অসীম কৃতজ্ঞতা। এই স্মৃতি সংগ্রহশালার মাধ্যমে আমরা শহীদদের স্মৃতি সংগ্রহ করেছি। যারা শহীদ হয়েছেন তারা ঢাবিরই একটা অংশ। আগামীতে এটিকে বিস্তৃত করে একটি পূর্ণাঙ্গ স্মৃতি জাদুঘরে পরিণত করার কথা জানান উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান।
উপাচার্য বলেন, ‘দেশকে ভালোবেসে যারা জীবন দিয়েছে আমরা তাদের রক্ত কারো দলীয় রাজনীতিতে দলিত হতে দেব না। এই পর্যন্ত যতগুলো আন্দোলন হয়েছে সেগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই কেউ যদি ইতিহাসের ঘটনাগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায় তবে আমরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াব।’
শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ ওয়াসিম আকরামের বাবা শফি আলম বলেন, ‘আমার সন্তান সরকারি চাকরির জন্য জীবন দেয়নি। তারা জীবন দিয়েছে যেন পরবর্তী প্রজন্ম ভালোভাবে থাকতে পারে, যেন একটি সুন্দর দেশ পায়। এজন্যই তারা যুদ্ধ করেছে। আমরা চব্বিশের গণহত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাদেরকে (শহীদ পরিবার) সামনে নিয়ে রাজনীতি হোক সেটা আমরা চাই না।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব রোবায়েত ফেরদৌস এবং শহীদ পরিবারের অন্য সদস্যরা।